তিনি শুধু দুহাতে বইটি কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করলেন । তার কয়েক ঘন্টা পরেই তাঁর মৃত্যু হল

█ জিবনের শেষ পর্বে এসে কোপার্নিকাসের সাথে পরিচয় হল রেটিকাস নামে এক তরুণ জার্মান পন্ডিতের সাথে । তাঁরই আন্তরিক অনুরোধে শেষ পর্যন্ত কোপার্নিকাস এ বই প্রকাশ করতে সম্মত হলেন । তখন তিনি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন । তাই বই প্রকাশের দায়িত্ব দিলেন রেটিকাসের উপর । যাতে যাজক সম্প্রদায়ের অনুমোদন পাওয়া যায় তাই কোপার্নিকাস এ বইটি উৎসর্গ করলেন তৃতীয় পোপ পলকে । নুরেমবার্গের একজন মাদ্রাকর আন্দ্র ও সিথান্ডারের ছাপাখানায় এ বই ছাপার ব্যবস্থা হয় । আন্দ্রেই ছিলেন লুথারপন্থী-তাছাড়া এ বই প্রকাশিত হলে কোপার্নিকাসের সাথে তাকেও যে বিপদগ্রস্ত হতে হবে এ ভয়ে ভীত হয়ে পড়লেন । তাই ব্ইয়ের প্রথমে লিখলেন,-এ বইয়ের বিষয়বস্তু পুরোপুরি সত্য নয় । অনুমানের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে । এ কথাগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি সত্যমিথ্যার একটা সংশয়াচ্ছান্ন কারণার সৃষ্টি করলেন যাতে প্রয়োজন এ বইটির মিথ্যা বলে চালানো যেতে পারে । শুধু তাই নয়, সিথান্ডার ইচ্ছামত বই থেকে নাম তুলে নিলেন, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল আরিস্টার্কাসের নাম । যিনি প্রথম গভীর বিশ্বাসের সাথে বলেছিলেন সূর্য স্থির পৃথিবী গতিশীল । এ বই প্রকাশিত হওয়ার পর বহুদিন পর্যান্ত পন্ডিতেরা কোপার্নিকাসের সমালোচনা করেছে, তিনি পূর্বসূরীদের ঋণ স্বিকার করেননি । পরে যখন মূল পান্ডুলিপি পাওয়া যায় তখন জানা যায় প্রকৃত তথ্য । ১৫৪৩ সালে বইটি প্রকাশিত হল । তখন তিনি মৃত্যুশয্যায় । শোনা যায় যখন এ বইটি ছাপা অবস্থায় তাঁর কাছে এসে পোঁছল তখন তাঁর পড়েদেখার মত অবস্থা ছিলনা । তিনি শুধু দুহাতে বইটি কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করলেন, তার কয়েক ঘন্টা পরেই তাঁর মৃত্যু হল । কোপার্নিকাস এ বইয়ের মধ্যে দিয়ে যে সত্যের প্রতিষ্ঠা করলেন তার উপর ভিত্তি করে গ্যালিলিও, কেপলার, নিউটন, আইনস্টান জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন নতুন দিগন্তকে উন্মোচন করলেন ।